বাটার ক্রিম ও জন্মদিনের কেক

birthday cake
birthday cake

বাটার ক্রিম ও জন্মদিনের কেক


জন্মদিন, বিবাহ বার্ষিকী বা যেকোনো বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটা স্পেশাল কেক তো লাগেই। আর সেই কেকটা যদি আপনার নিজের হাতে বানানো হয় তাহলে তো কথাই নেই। ঘরে আমরা ওভেন বা চুলাতে টুকটাক নানারকম কেক বানালেও জন্মদিনের কেকগুলো বানাতে বেশ ভয় পাই।
তবে কি জন্মদিনের কেক কোনো আলাদা কেক? আসলে চকোলেট বা ভ্যানিলা যে কোনো কেকের উপর ক্রিম দিয়ে সাজানো সুন্দর কেকগুলোকেই আমরা ঘরোয়া ভাবে জন্মদিনের কেক বলে থাকি। বেকারি গুলোতে গেলেই যখন তখন এই কেক কিনে নেয়া যায় কিন্তু প্রিয়জনের জন্য নিজহাতে বানানো কেকটা কি একটু বেশি স্পেশাল নয়?
তবে সেই স্পেশাল কেক বানাতে আমাদের কেকের পাশাপাশি দরকার হয় কেকের ক্রিম, বিশেষ করে বাটার ক্রিমের। অনেকেই ভালো কেক বানাতে পারলেও ক্রিম বানানোর নিয়মটা জানেন না। আজকে চলুন বেসিক বাটার ক্রিমের রেসিপির সাথে সাথে কেক সাজানোর একটা আইডিয়া নিয়ে নেয়া যাক।

উপকরণ

  • একটি ভ্যানিলা /চকোলেট কেক (৮ ইঞ্চি মাপের)
  • ১/৪ কাপ সুগার সিরাপ
  • ২ কাপ বাটার ক্রিম

বাটার ক্রিম বানাতে লাগবে:

  • ২৫০ গ্রাম (১ কাপ) বাটার
  • ১ চা চামচ ভ্যানিলা এসেন্স
  • ২ কাপ চিনি
  • ২ টেবিল চামচ দুধ
  • প্রয়োজন মতো ফুড কালার পছন্দ মত

সুগার সিরাপ বানাতে লাগবে:

  • ৪ টেবিল চামচ চিনি
  • ৬ টেবিল চামচ পানি
  • ১ টেবিল চামচ লেবু/কমলার রস

প্রস্তুত প্রণালী

  • বাটার ক্রিম বানাতে আমরা যে বাটার ব্যবহার করবো সেটা যেন আনসল্টেড হয় আর অন্ততপক্ষে ক্রিম বানানোর ঘন্টাখানেক আগে ফ্রিজ থেকে বাটার বের করে রাখতে হবে। এতে করে বাটার নরম হয়ে যাবে এবং বিট করতে সুবিধা হবে।
  • চিনি ব্লেন্ডারে একদম মিহি পাউডারের মতো করে গুঁড়ো করে নিন। ২ মিনিটের মত সময় লাগবে। তারপর চালনিতে করে একবার চেলে নিতে হবে। এটাই আমাদের আইসিং সুগার। এখন থেকে মেপে ৩৭৫ গ্রাম বা ৩ কাপ আইসিং সুগার নিতে হবে ১ কাপ বাটার এর জন্য।
  • এবারে একটা গর্তওয়ালা বাটিতে নরম বাটার নিয়ে ইলেকট্রিক বিটার দিয়ে বিট করে ফ্লাফি করে নিতে হবে। মোটামুটি ৭ থেকে ৮ মিনিট বিট করার পর হলদেটে বাটারের রং সাদাটে হয়ে আসবে এবং পরিমাণেও দ্বিগুন হয়ে যাবে। সেই পর্যায়ে এতে অল্প অল্প করে আইসিং সুগার ও দুধ দিয়ে হাই পাওয়ার এ বিট করতে হবে। আস্তে আস্তে রংটাও অনেক লাইট হয়ে যাবে এবং ঘন ক্রিম এর মত হবে। শেষের দিকে একফাঁকে ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে মিশিয়ে নিলেই আমাদের বাটার ক্রিম তৈরী। রঙিন ক্রিম করতে চাইলে আলাদা আলাদা বাটিতে পছন্দমত ফুডকালার দিয়ে মিশিয়ে নিন।
  • এবারে আমরা সুগার সিরাপ বানিয়ে নিবো। তারজন্য চিনি-পানি-কমলার রস একসাথে মিডিয়াম আঁচে একবার বলক তুলে নামিয়ে নিন। এটাই আমাদের সিরাপ যা আমরা কেকের উপর ব্রাশ করবো কেক ময়েস্ট করার জন্য। আপনি চাইলে এই সিরার পরিবর্তে স্প্রাইট বা সেভেন আপ ব্যবহার করতে পারেন
  • সব শেষে এবারে আমাদের লাগবে একটা কেক। হতে পারে সেটা চকোলেট কেক , ভ্যানিলা কেক, ফ্রুইট কেক বা যেকোনো ফ্লেভারের প্লেইন কেক । রাউন্ড বা স্কয়ার যে কোনো শেপের কেক নেয়া যাবে। চকোলেট ও প্লেইন ভ্যানিলা কেকের রেসিপি তো এই বইয়েই পাবেন। ওই রেসিপিতে ঘরে বানিয়ে নিয়ে পারেন। কেক ঠান্ডা হলে মাঝ বরাবর ধারালো ছুরি দিয়ে পাতলা করে আড়াআড়ি ৩ টা স্লাইস কেটে নিন, যাতে তিন লেয়ারে কেক সাজানো যায়। চাইলে ২ লেয়ারেও কেটে নেয়া যাবে।
  • এখন কেক সাজানোর পালা। কেটে নেয়া প্রত্যক টা কেক স্লাইসের উপর স্লাইস বা চিনি পানির সিরাপ ব্রাশ করে নিন। তারপর একটা স্লাইসের ওপরে মোটা করে কেকের ক্রিম ছড়িয়ে এর ওপরে আর একটা স্লাইস বসিয়ে দিতে হবে। এভাবে তিনটা স্লাইস একটার উপর আরেকটা বসানো হলে কেকের চারপাশে ক্রিম দিয়ে কাভার করে নিন। এই হলো কেকের বেসিক ডেকোরেশন। এখন বাকি যে ক্রিম আছে তাতে পছন্দমতো কালার মিশিয়ে কেক সাজিয়ে নিন।
  • নানারকম নকশাদার সাজে ক্রিম দিয়ে কেক সাজাতে চাইলে দোকান থেকে পাইপিং ব্যাগ ও নজেল কিনে ডিজাইন করে নিতে পারেন। কিভাবে ডিজাইন করবেন সেটা তো আর লিখে বোঝানো সম্ভব নয়, ওটা আপনাকে নিজের মতো করেই করতে হবে । হয়তো ভাবছেন দোকানের মতো অত সুন্দর কি আর পারবো বানাতে?
  • হ্যাঁ, বেকারির প্রফেশনাল কেকের কারিগরের মতো হয়তো সুন্দর হবে না। কিন্তু যে ভালোবাসা থেকে প্রিয়জনের জন্য আপনি নিজহাতে একটা কেক বানাবেন সেই ভালোবাসার কারণে তার কাছেও আপনার বানানো কেকটাই অনেক বেশি সুন্দর আর স্পেশাল হয়ে যাবে।
Exit mobile version