টার্কিশ ডিলাইট বা টার্কিশ ক্যান্ডি রেসিপি

টার্কিস ডিলাইট বা টার্কিস সুলতান লোকুম ।। টার্কিস লোকুম হিসাবে পরিচিত, এই ছোট, জেলযুক্ত কিউবগুলি তুরস্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিষ্টি। তুর্কি লোকুম দুধ, ময়দা এবং চিনির জেলকে ভিত্তি করে তৈরি হয়। ভেতরে থাকে ক্রিম ,পেস্তা এবং আখরোট। আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম এই সুন্দর এবং লোভনীয় মিষ্টিটি বানানোর রেসিপি।।

টার্কিশ ডিলাইট বা টার্কিশ ক্যান্ডি
টার্কিশ ডিলাইট বা টার্কিশ ক্যান্ডি

টার্কিশ ডিলাইট বা টার্কিশ ক্যান্ডি


আমার কাছে এটা অনেকটা কর্নফ্লাওয়ার হালুয়া বা বোম্বে করাচি হালুয়ার মতো লাগে। আমি জার্মানিতে থাকি, এখানকার টার্কিশ শপগুলো নানা রঙের ও ঢঙের টার্কিশ ডিলাইট পাওয়া যায়। তবে সেগুলো এত বেশি মিষ্টি যে এক টুকরো ও পুরোটা খেতে পারিনা আমি। তবে এটা মোটামুটি কম মিষ্টি হয়েছে। আসলে রেসিপিটি এমন যে চাইলেও একেবারে কম মিষ্টি দেয়া সম্ভব হয় না। চলুন আমরা দেখে নেই কিভাবে বানাতে হবে এটা তার পুরো প্রস্তুত প্রণালী।

উপকরণ

  • ৪ কাপ চিনি
  • ৪+ ১/৪ কাপ পানি
  • দেড় কাপ কর্নফ্লাওয়ার
  • ১ চা চামচ ক্রিম অফ টার্টার
  • ১ টেবিলচামচ লেবু রস
  • দেড় টেবিল চামচ গোলাপ জল
  • ২/৩ ফোঁটা রেড ফুডকালার
  • দেড় কাপ পাউডার সুগার

টিপস :

  • জানি উপকরণে '' ক্রিম অফ টার্টার '' দেখেই অনেকের কপাল কুঁচকে গিয়েছে। এটা কোথায় পাবেন ভাবছেন। বড় বড় সুপার শপ গুলোতে বেকিং ইউনিটে সহজেই এটা পাবেন। দেখতে অনেকটা বেকিং সোডা/পাউডারের মতো। অনেক ক্ষেত্রে ফার্মাসীতেও এটা পাওয়া যাবে। আর যদি একান্তই না পান তো খোসাসহ লেবুর ফালি ব্যবহার করুন , পরে তুলে ফেলে দিবেন। ক্রিম অফ টার্টার বা সাইট্রিক এসিড এর কাজ হলো সবধরণের ক্রিস্টালাইজ রিমুভ করা যা লেবুর মধ্যেও বিদ্যমান। তবে যদি খুঁজে পান তো চেষ্টা করবেন ক্রিম অফ টার্টার ব্যবহার করতে। 

প্রস্তুত প্রণালী

  • একটা ছোট সসপ্যানে চিনি , লেবুর রস ও দেড় কাপ পানি দিয়ে মাঝারি আঁচে এটাকে জ্বাল করুন। তারপর নেড়ে নেড়ে মেশাতে থাকুন। চিনি ও পানি একসাথে মিশে গেলে আঁচ একদম কমিয়ে দিন। আমি এই সিরাকে নিভু আঁচে ৩০ মিনিট পর্যন্ত জ্বাল দিয়েছি। মাঝে মাঝে অবশ্য নেড়ে দিতে হবে। খুব ভালো হয় যদি একটা ব্রাশ পানিতে ভিজিয়ে প্যানের ভেতরে চারপাশটা মুছে দিতে পারেন। তাহলে ক্রিস্টালাইজ হবে না।
  • এবার আরেকটা সসপ্যানে বাকি পানির সাথে ক্রিম অফ টার্টার ও কর্নফ্লাওয়ার দিয়ে ভালো করে নেড়ে মিশিয়ে নিন। তারপর এটাকে নিম্ন মাঝারি আঁচে চুলায় বসিয়ে দিন এবং অবশ্যই ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। কোনোভাবেই মেশানো বন্ধ করবেন না। মিশ্রণটি দেখতে যখন আঠার মতো হয়ে যাবে তখন চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
  • এবার এই মিশ্রনের মধ্যে সাবধানে অল্প অল্প করে সেই গরম চিনির সিরা ঢালুন আর হুইস্ক করে করে মেশাতে থাকুন। তবে অবশ্যই একেবারে সব ঢেলে দিবেন না। একটু একটু করে সিরা দিবেন আর ভালো করে নেড়ে নেড়ে মেশাবেন। কোনোভাবেই যেন দোলা না পাকিয়ে থাকে। সিরা আর কর্ণফ্লাওয়ারের মিশ্রণ একসাথে ভালো ভাবে মিশে যেতে হবে।
  • এবার এটাকে আবারো চুলায় বসিয়ে একদম নিভু আঁচে ১ ঘন্টার জন্য জ্বালাতে হবে এবং অবশ্যই ক্রমাগত নাড়তে হবে নাহলে তলায় জমাট বেঁধে যাবে এবং পুড়ে যাবে। আর মনে রাখবেন আঁচ যেন একদম নিভু থাকে। এই ১ ঘন্টা টা বেশ বিরক্তিকর নাড়তে নাড়তে হাত লেগে যায়। আমি যেটা করেছি ৫ মিনিট করে বিরতি দিয়ে দিয়ে নেড়েছি। আর ইলেকট্রিক বিটার মিক্স করেছি , এতে করে সুবিধা হলো বিরতি দিয়ে নাড়লেও সব একসাথে মিশে যায় নিমেষেই। এখন কথা হলো আপনার যদি ইলেকট্রিক বিটার না থাকে তো বাসায় কেউ থাকলে দুজন মিলে পালাক্রমে নাড়ানাড়ি করুন…..হা হা হা।
  • এক ঘন্টা পর দেখবেন মিশ্রনে খুব সুন্দর একটা হালকা সোনালী আভা চলে এসেছে তখন বুঝবেন হয়ে গিয়েছে। এবার এতে গোলাপজল ও কয়েকফোঁটা লাল ফুডকালার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নামিয়ে নিন। একটা চারকোনা মোল্ডে হালকা করে তেল ব্রাশ করে নিয়ে মিশ্রণটি সমান করে ঢেলে দিন। এই সময় এটা বেশ নরম থাকবে কিন্তু ঠান্ডা হওয়ার পর একদিন জমে সেট হয়ে যাবে। মোটামুটি ঠান্ডা হলে মোল্ডটা ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন যতক্ষণ না পুরোপুরি ঠান্ডা হয় এবং জমাট বাঁধে। আমি সারারাত রেখেছিলাম।
  • জমাট বেঁধে গেলে ফ্রিজ থেকে বের করুন। পাউডার সুগারের মধ্যে রেখে কিউব করে কেটে নিন। আর প্রতিটি টুকরোকে পাউডার সুগার দিয়ে ভালো করে কোট করে নিন। এয়ারটাইট বক্সে পাউডার সুগার সহ রেখে দিলে মাস খানেক ভালো থাকবে।
Exit mobile version